অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে কি হয়
পেজ সূচিপত্রঃ অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে কি হয়
অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে কি হয়
নিয়ম অনুযায়ী ব্যায়াম করার মাধ্যমে তা আপনার শরীর সুস্থ থাকে। কিন্তু জানেন কি অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে আপনার কি ক্ষতি হতে পারে। অতিরিক্ত ব্যায়াম এর ফলে আপনার পেশি ব্যাথা, ক্লান্তি, চরম মেজাজ এর পরিবর্তন এবং ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে। পরিশ্রম করলে শরীর ঠিক থাকে, এবং রাতে ঘুম ভালো হয় ঠিকই, তবে আপনি যদি অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে আপনার সারারাত খুব অস্থিরতা মধ্যে কাটে, শরীর ব্যথা হয়ে যাই।
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর স্বাস্থ্য ও মন ভালো থাকবে। ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরের হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসের অঙ্গ প্রতঙ্গের সহজশীলতা বৃদ্ধি করে থাকে। তাছাড়া ব্যায়ামের কারণে হৃদযন্ত্রের প্রাচীরের পুরুত্ব বৃদ্ধি করে থাকে। এছাড়াও মানসিক অবসাদগ্রস্ততা দূর করে। ব্যক্তির যৌন আবেদন বৃদ্ধি, শরীরে সঠিক অনুপাত অর্জনে শারীরিক ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- আরো পড়ুন:বাংলা আর্টিকেল লেখার নিয়ম
নিয়মিত ব্যায়াম যেমন শরীরকে সুস্থ রাখে, অপরদিকে এর কিছুই দিকের অপকারিতা ও আছে। ব্যায়ামের পর পেশি পূর্ণ গঠনের জন্য সময় দেওয়া প্রয়োজন। না দিলে শরীরে ব্যথা হয় যা প্রতিদিন কাজ করতে আমাদের কষ্ট হয়ে থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীর লাজুক হয়ে পড়ে। তাছাড়া অতিরিক্ত ব্যায়াম এর ফলে শরীরের বিভিন্ন পিসিতে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেই।
ব্যায়াম করার সঠিক সময়
আপনারা কম বেশি সবাই জানেন যে ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীর ও মন ভালো থাকে। কিন্তু অনেকেই জানেনা কখন ব্যায়াম করার প্রয়োজন। বা কোন সময় ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরের জন্য উপকার। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনি কোন সময় ব্যায়াম করবেন। বা কোন সময় ব্যায়াম করা সঠিক সময়। সকালে শরীর চর্চার জন্য একটি সর্বোত্তম সময়।
সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা হলে, এবং ঘুমের পর দীর্ঘ সময় ব্যায়াম করলে শরীর তরতাজা হয়ে থাকে। যার ফলে শরীরে ক্লান্তি আসে না এবং দেখবেন সব কাজ কর্মে মন বসবে। তাহলে বুঝতে পারছেন সকালে ব্যায়ামটা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এছাড়াও আপনি সন্ধ্যার পরে ব্যায়াম করতে পারেন। বিজ্ঞানীদের মতে সন্ধ্যার পর ব্যায়াম করলে তা শরীরে ক্লান্তি বা ঘুমের প্রভাব ফেলে থাকে, যদি ব্যায়ামের পর গোসল করে থাকেন তাহলে এটি থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যায়। আশা করছি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
ব্যায়াম না করলে কি হয়
ব্যায়াম না করলে কি হয় আপনি কি জানেন? যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক। শরীরকে তরতাজা রাখার জন্য যেমন আমাদের খাবার প্রয়োজন, তেমনি শরীরে রোগ মুক্ত রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন। আপনি যদি নিয়মিত শরীরচর্চা না করে থাকেন তাহলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কাজকর্মের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
ব্যায়াম না করার ফলে হালকা হয়ে যায়। যা শরীরে ওজন কমে যায়, এছাড়াও শরীরে গঠন নষ্ট হয়ে পড়ে। শরীর ক্লান্তি আসে যা আপনার নিয়মিত কাজকর্মে মন বসবে না। যাতে আপনার ভুরি দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। ব্যায়াম না করার মাধ্যমে রক্তচাপের তারতম্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে বেশি অক্সিজেন সরবরাহ করা বন্ধ করে দেই।
ব্যায়াম না করলে মস্তিষ্ক সব সময় ক্লান্ত হয়, এবং অসুস্থ অনুভূতি দেখাতে পারে। এবং আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। এবং কোন কাজ করতে গেলে হাপিয়ে পড়বেন। আপনার সুঠাম পেশিগুলো শুকিয়ে যাবে। যা বিশ্ব সংস্থার মতে শারীরিক ব্যায়াম এর অভাবে হৃদরোগের প্রবণতা ১৭% বৃদ্ধি করে থাকে।
ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত
আপনি যদি ব্যায়াম করে থাকেন, তাহলে আপনার শরীরে ক্যালরি ক্ষয় হয়ে থাকে। যা আপনাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে ভালো খাবার খেয়ে থাকতে হবে। আপনি চেষ্টা করবেন ব্যায়াম করার ৪০ থেকে ৫০ মিনিট মধ্যে খেয়ে নিতে। যাতে এরপর ফলের রস, কলা, ডিম গ্রুকজ খেয়ে থাকবেন। আপনি ব্যায়াম করার ১৫ থেকে ২০ মিনিট ব্যায়াম করার পর এক গ্লাস পানি পান করে থাকবেন।
এছাড়াও আপনাকে প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করতে হবে। শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি ২০ শতাংশ আসে খাবারের সঙ্গে, এবং বাকিটা পানি পান করার মাধ্যমে তা পূরণ করে থাকে। খালি পেটে ব্যায়াম করা ঠিক হবে না, সেজন্য আপনাকে ব্যায়াম করার আগে কিছু হালকা খাবার প্রয়োজন। আবার ব্যায়াম এর আগে কোন ধরনের ভারি খাবার খাওয়া ঠিক নয়। আপনি ব্যায়াম এর আগে যেমন ফলের রস হালকা ফলমূল খেয়ে থাকবেন।
প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কি হয়
আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাহলে আপনার শরীর মন মানসিকতা ভালো ও সতেজ থাকে। যা প্রতিদিন ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনি অনেক দিক থেকে ভালো ফলাফল পেয়ে থাকবেন। যা আপনি কোন কাজ, কিংবা পড়াশোনা বিভিন্ন ধরনের কাজকর্মে মন বসবে।
- আরো পড়ুন:ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়
এছাড়াও প্রতিদিন ব্যায়াম করার মাধ্যমে তা আপনার হৃদরোগ সংবহন, তন্ত্রের জটিলতা, ডাইবেটিস, স্থলতা রোদ ভূমিকা রাখে। শরীরে সঠিক অনুপাত অর্জনে তার প্রতিদিন ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও যে কোন উপকারে আসে সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো
ঘুমের মান উন্নত করাঃ ঘুম শরীরের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ। শরীর ঠিক রাখতে আমাদের অবশ্যই প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের মান উন্নয়নের জন্য ঘুমের ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে অল্প মেডিটেশন করতে পারেন এতে আপনার গুমতি ভালো হবে। এছাড়া ঘরের লাল আলো জ্বালাতে পারেন কারণ গবেষণা দেখা গিয়েছে লাল আলো মেলাটনিন নিঃসরণ বাড়ায় এবং ঘুমাতে সাহায্য করে।
দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করেঃ ওষুধ সেবনের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে থাকে। একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী রোগ বা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা নামেও পরিচিত একটি স্বাস্থ্যের অবস্থা বা রোগ বা স্থায়ী বা অন্যথায় দীর্ঘস্থায়ী তার প্রভাব বা একটি রোগ বা সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে থাকে। যা দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য ব্যায়ামের মাধ্যম অতুলনীয়।
প্রতিদিন কত ঘন্টা ব্যায়াম করা উচিত
শুধু ব্যায়াম করলে যে শারীরিক উন্নতি হবে তা না, আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কিভাবে নিয়ম করে ব্যায়াম করা উচিত। এবং দিনে কত ঘন্টা ব্যায়াম করলে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১৮ বছর বয়সে, বা প্রাপ্ত বয়সের জন্য মাঝারি ধরনের ব্যায়ামের ব্যাপ্তিকাল হওয়া উচিত। সপ্তাহে কমপক্ষে আড়াই ঘন্টা অর্থাৎ আপনাকে প্রতিদিন 21 মিনিট ব্যায়াম করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পারে।
আপনি যদি সুফল পেতে চান তাহলে আপনাকে এটুকু সময় ব্যায়াম এর জন্য দিতে হবে। সারাদিনের মধ্যে এটুকু ব্যায়াম করা সময় তা কিছুই না। আপনি যে ব্যায়াম করে হাঁপিয়ে যান সেগুলো ব্যায়াম পরিহার করুন। ব্যায়াম বিভিন্ন ভাবে করা হয়ে থাকে যেমন নাচ, সাঁতার কাটা, বা খেলাধুলার মত হয়ে থাকে।
সপ্তাহে কতদিন ব্যায়াম করা উচিত
আপনি যদি সপ্তাহে একবার দুইবার জিমে যান তাহলে তেমন কোন উপকার আপনারা পাবেন না। আপনি যদি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না পারেন তার জন্য আপনাকে প্রতি সপ্তাহে আড়াই ঘণ্টার মাঝামাঝি ব্যায়াম করার প্রয়োজন হবে। তাছাড়া আপনি যদি শরীরের ফিটনেস ঠিক রাখতে চান তাহলে আপনাকে সপ্তাহে মোট ১৫০ মিনিট শরীরচর্চা করলেই যথেষ্ট।
আপনি যদি তার কম সময় সপ্তাহে ব্যায়াম করে থাকেন তাহলে ফিটনেস ঠিক রাখতে তেমন ফলাফল পাবেন না। আপনাকে সপ্তাহের ৩ থেকে .৪ দিন অন্তত 40 থেকে 50 মিনিট ব্যায়াম করার জন্য বিনিয়োগকরার প্রয়োজন হবে।
এছাড়া আপনাকে সকালে ঘুম থেকে উঠে তা ব্যায়াম করতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি প্রতি দিন সকালে সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত ব্যায়াম করেন তাহলে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। আপনি রুটিন অনুযায়ী তা নিয়ম করে ব্যায়াম করে থাকেন। আপনি অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে তা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
তাছাড়া ভালো ত্বক পেতে প্রতিদিন অক্রান্ত পরিশ্রম এর প্রয়োজন নেই। বরং তিন দিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে ত্বকের পরিবর্তন নিজ চোখে দেখতে পাবেন। শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রতিদিন নূন্যতম এক ঘণ্টা করে খেলাধুলা ও শারীরিক সক্রিয় কর্মকান্ডে সংস্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। শিশুদের হাতে ফোন না দিয়ে তাদেরকে নিয়মিত খেলাধুলা করান এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটবে।
যোগ ব্যায়ামের উপকারিতা অপকারিতা
যিনি যোগ ইমুশীলন করেন বা দক্ষতার সহিত উচ্চমার্গের যোগ দর্শন অনুসরণ করেন তাকে যোগী বা যোগিনী বলা হয়। আপনি যদি নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করেন তাহলে আপনার হার্ট ভালো থাকবে। রক্তচাপ কবে নমনীয়তা বাড়াবে, এবং বেশি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য যোগব্যায়াম বা অবোধ্য ওষুধ তা এক কথায় মেনে নিচ্ছেন সমস্ত চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞরা।
সকালে ব্যায়াম করলে দিনটা ভালোভাবে শুরু হয়, সব কাজ করতে আগ্রহী জাগে, এবং মন মানসিকতা এবং কাজের উপর চাহিদা বাড়ে। সকালে যোগ ব্যায়াম করলে আপনার অনেক উপকারে আসে। তবে সন্ধ্যার পর যোগব্যায়াম এর উপকারিতা কম হয়। এছাড়াও নিয়মিত যোগব্যায়ামের মাধ্যমে হার্ট ভালো রাখে। যোগব্যায়াম যেমন উপকারী আছে তেমনি এর অপকারিত রয়েছে।
যোগ ব্যায়ামের কারণে হওয়া ব্যাথার আকৃতির অংশ এমন মারাত্মক হয় যে, তা প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। দুই থেকে তিন মাসেরও বেশি সময় ব্যথা পোহাতে হয়। এটি দ্বারা কব্জি, কাঁধ, কোনই তীব্র ব্যথা হতে পারে। তবে ফ্রি হ্যান্ড বা সংস্পর্শের হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। এই ব্যায়ামটি ভরা পেটে করা উচিত নয়। খাওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর এই ব্যায়ামটি করতে হবে।
লেখকের কথা
আশা করছি আপনারা উপরোক্ত পোস্ট পড়ে তা ব্যায়াম এর অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবং কখন কোন সময় ব্যায়াম করবেন তা জেনেছেন এছাড়াও জেনেছেন সপ্তাহে কয়দিন এবং ব্যায়াম এর আগে কি খেতে হবে তা বিস্তারিত উপরোক্ত পোস্টে আমি আপনাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। যদি এই পোস্ট সম্পর্কে কোন ভুল ধারণা বা কিছু জানার দরকার থাকে তাহলে আমাদের যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করবেন । আর আপনার যদি এ পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন।
রকমারিবিডি৫নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url